ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ১ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যমুনা রেলসেতু দিয়ে ছুটল ট্রেন

আপলোড সময় : ১২-০২-২০২৫ ০৬:০৩:২২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১২-০২-২০২৫ ০৬:০৩:২২ অপরাহ্ন
যমুনা রেলসেতু দিয়ে ছুটল ট্রেন ফাইল ছবি
প্রথমবারের মতো নতুন নির্মিত যমুনা রেলসেতু পাড়ি দিলো যাত্রীবাহী ট্রেন। এর মধ্য দিয়ে রাজধানীর সঙ্গে উত্তরবঙ্গের নতুন রেল যোগাযোগের দ্বার উন্মোচিত হলো।

বুধবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি যমুনা রেলসেতু দিয়ে ঢাকার উদ্দেশে পাড়ি দেয়। আর প্রথম ট্রেনে যমুনা রেলসেতু পার হয়ে স্বপ্নের সেতুর সাক্ষী হতে পেরে উচ্ছ্বসিত যাত্রীরা। সেতুর নির্মাণের সঙ্গে জড়িতরাও উল্লাস প্রকাশ করেছেন। দিনটি স্মরণীয় করতে রাখতে সেতু দিয়ে ট্রেন চলার সময় যাত্রীরা মোবাইল দিয়ে ছবি ও ভিডিও করেন।

ট্রেনযাত্রী আবুল হোসেন, আকবর হোসেনসহ অনেকে বলেন, যমুনা রেলসেতুর ওপরে ট্রেন চলাচলে প্রথম যাত্রী হিসেবে সাক্ষী হলাম। খুব আনন্দিত ও উল্লসিত। মাত্র ১০ মিনিটে সেতু পার হয়েছে। উত্তরাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন শুরু হলো আজ।

যমুনা রেলসেতু প্রকল্পের পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসউদুর রহমান বলেন, সেতুর দুটি লাইনের মধ্যে একটি লাইনে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চালু হলো। পর্যায়ক্রমে শিডিউল অনুযায়ী ৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ যমুনা রেলসেতুতে ট্রেনগুলো চলবে। ফলে আগের যমুনা সেতু দিয়ে আর ট্রেন চলবে না।

তিনি বলেন, রেলসেতুতে দুটি লাইন থাকলেও আজ একটি লাইন দিয়েই উভয়দিকে ট্রেন চলাচল করবে। কাল ঢাকা থেকে যেতে ডান পাশের লাইন, অর্থাৎ সেতুর উত্তর পাশের লাইনটি দিয়ে ট্রেন চলাচল করবে। আর আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি সরকারের উপদেষ্টাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ উদ্বোধনের পর আনুষ্ঠানিকভাবে রেল চলাচল করবে।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ৯ হাজার ৭৩৪ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালের আগস্টে যমুনা নদীর ওপর ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাকের রেলসেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পরে এ ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১২ হাজার ১৪৯ কোটি ২ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। প্রকল্পটি ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরে সময় সীমা বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর করা হয়। এর আগে, ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। সেতুটির ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে জাপানি কোম্পানি ওটিজি ও আইএইচআই জয়েন্ট ভেঞ্চার।

যমুনা সেতুর সমান্তরালে ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকের এ রেলসেতু ব্যবহারের জন্য ৭.৬৬৭ কিলোমিটার রেলওয়ের অ্যাপ্রোচ এমব্যাংকমেন্ট এবং লুপ, সাইডিংসহ মোট ৩০.৭৩ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ করা হয়। প্রকল্পের শুরুতে এই সেতুর নাম ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর গত বছরের ডিসেম্বরে সেতুর নাম পরিবর্তন করে দীর্ঘতম যমুনা রেলসেতু নামকরণ করা হয়।

যমুনা নদীর ওপর অবস্থিত যমুনা বহুমুখী সেতুটি ১৯৯৮ সালে চালু হয়। এতে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল ও সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়। তবে ২০০৮ সালে সেতুটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় কমিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনের গতিসীমা। যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হয় ট্রেন যাত্রীদের। এই দুর্ভোগ কমাতে সেতুটির ৩০০ মিটার উত্তরে নির্মাণ করা হয়েছে দেশের দীর্ঘতম যমুনা রেল সেতু।

বিডি প্রতি

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ